দিপক রায়, নিজস্ব প্রতিবেদক :
সম্প্রতি মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাবলেট বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দ্বিতীয় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ দিলে ইউএনও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তে ২য় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীকে ট্যাব না দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং সেই সাথে তৃতীয় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীকেও ট্যাব না দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেওয়ার ঘটনাটি প্রমাণিত হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার তারাগঞ্জ ওয়াকফ এস্টেট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, কয়েকদিন আগে তারাগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অষ্টম ও নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় (বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে ট্যাবলেট (ট্যাব) বিতরণ করা হয়। সুষ্ঠুভাবে ট্যাব বিতরণের জন্য উপজেলা প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের নবম ও দশম শ্রেণীর সেরা ৩ শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে নামের তালিকা জমা দিলেও তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১তম শ্রেণিতে ১ম স্থান অধিকারকারী সাম্মাম নাদিয়া, ২য় স্থানে আব্দুর রাফি ও ৩য় স্থানে কাকুলী রানী রায়ের নাম পাঠানো হয়। পুরস্কার বিতরণের কয়েকদিন পরে প্রকৃতপক্ষে ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ২য় স্থান অধিকারকারী উপাসনা রায়ের অভিভাবক ট্যাব বিতড়নের বিষয়টি জানতে পেরে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রংপুর টাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক দিপক রায়কে জানায়। দিপক প্রকৃত তথ্য উৎঘাটন করতে একাধিকবার ওই বিদ্যালয়ে গেলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মুসা সরকার তথ্য দিতে টালবাহানা করে কয়েকদিন সময় ক্ষেপন করেন। এরপরেও তথ্য না পেয়ে দিপক তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেন এবং বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে অবহিত করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
রবিবার ও সোমবার মাধ্যমিক কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে রাফি ও কাকুলীকে ট্যাব প্রদানে অনিয়ম হওয়া ঘটনার সত্যতা পেয়ে ইউএনওকে জানান। সেই সাথে ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ২য় স্থান অধিকারকারী উপাসনা রায় ও ৩য় স্থান অধিকারকারী চানক্য কুমার বলে চিহ্নিত করে ইউএনওর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সরকারি ট্যাব প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা প্রদানে অনিয়মের বিষয়ে জানতে তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুসা সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা তৈরিতে আমাদের একটু ভূল হয়েছিল। ভূলতো মানুষেরই হয়। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তো বিষয়টি সংশোধন করেছেন বলেই ফোন কেটে রেখে দেওয়ায় আর কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাহেনা ইয়াসমীন বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ২য়স্থান অধিকারকারী উপাসনা রায়ের অভিভাবকের কাছে অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাই। সেই সাথে প্রকৃতপক্ষে ৩য় স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীকেও একইভাবে বঞ্চিত করার বিষয়টিও উঠে আসে।
ইউএনও মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রকৃত যারা তারাই ট্যাব পাবে।